মসজিদের মিনার থেকে মাগরিবের আযান ভেসে এলো। কী আশ্চর্য, আযানের মায়াবী সুর যেন তিহানার কথা আরো মনে করে দিচ্ছে। ছালাতুল মাগরিব আদায় করলাম। আওয়াবিন পড়ার অভ্যাস নেই। আজ আওয়াবিনও পড়লাম। দীর্ঘ একটা মুনাজাত করলাম। যার সবটা জুড়েই ছিলো তিহানা।
আঁধার এসে ঢেকে দিচ্ছে পথঘাট। রাস্তার পাশে ল্যাম্পপোস্টগুলো হুতুমপেঁচার মতো জ্বলে উঠছে। বাসায় ঢুকলাম। দরজার সামনে দেখি তিহানার জুতা। আমি একদম হকচকিয়ে উঠলাম। ভেতরে কেমন যেন তোলপাড় শুরু হয়ে গেল। অন্যরকম এক অনুভূতি। এ অনুভূতির চিত্র আমার দুর্বল কলম আঁকতে পারবে না।
কলিং চাপার আগে ভাবলাম। আচ্ছা, 'ও' দরজা খুললে আমি কী করব! রাগ দেখাব ! সরি বলব! ও'র দিকে না তাকিয়ে ঘরে প্রবেশ করব! আমি যে কষ্ট পেয়েছি সেটা বুঝিয়ে দিব! নাকি বুকে টেনে নিব! তড়ি-ঘড়ি সিদ্ধান্ত নিলাম বুকেই টেনে নিব।
কলিং চাপলাম। দরজাটা খুলেই 'ও' আমার পাঞ্জাবির কলার টেনে ধরল। কী ভয়ংকরভাবেই না ধরল। ঝাড়তে শুরু করল কয়েক দিনের জমানো সব রাগ। ছয় দিন কেটে গেল। তুই একটা ফোন দিলে না ক্যান! তুই একটা পাত্থর মনের মানুষ! তোর হৃদয়ে দয়ামায়া বলতে কিচ্ছু নেই!
যে তিহানা কখনো 'আপনি' ছাড়া সম্বোধন করেনি৷ আজ কিনা 'তুমি'ও না, একদম 'তুই'এ চলে গেছে৷ আরো অবাক হলাম 'কেমন আছেন আপনি' এই কথাটা বলতে যে কিনা তিনবার দম নেয়, সে এতো দ্রুত কথা বলছে কিভাবে! ভালোবাসা দীর্ঘদিন চাপা পড়ে থাকলে বহিঃপ্রকাশটা মনে হয় এমনই হয়।
ও'র সব কথা এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে আরেক কান দিয়ে বের করলাম। কলিং চাপার আগে যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম, তা-ই করলাম।
সত্যমনা লেখক
আহমাদ আব্দুর রাজ্জাক
সত্যমনা ডট কম __সাহিত্য
COMMENTS