প্রশ্নোত্তরে সত্যমনা (৫)
এক নাস্তিকের আপত্তিঃ কোরাআনে ভুল আছে, আল্লাহ বলেছেন মায়ের গর্ভের সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে তা শুধু তিনিই জানেন আর কেউ জানেনা, অথচ আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে এখন আমরাও জানতে পারছি।
খন্ডনঃ কোন বিষয়ের ঠিক-ভুল বিচার করতে হলে অবশ্যই উক্ত বিষয়টির মৌলিক জ্ঞানটুকু থাকা আবশ্যক। কেননা যারাই ভুলটা ধরেছেন, নিশ্চয়ই শুনে কিংবা কোন সাধারণ বাংলা তরজমা দেখে, সুতরাং আমি অনুরোধ করবো নিজেদের আরবি ভাষার ও ব্যাকারণের জ্ঞান থাকলে কোরআন থেকে দেখে নিতে, অন্যথায় যাদের আছে এমন কারো কাছ থেকে জেনে নিতে।
প্রথমতঃ চোখ, কান,বন্ধ করে তর্কের খাতিরে যদিও মেনে নেই, আপনাদের উত্থাপিত আপত্তি সঠিক। আফসোস তাহলেও কোরআনের ভুল সাব্যস্ত হয় না। কেননা কোরআনে লিঙ্গের কোন কথা নেই। [২]
কোরআনে অতটুকুই বিদ্যমান, যা একটি সারগর্ভ ভাব প্রকাশ করছে। যেহেতু আয়াত এখানে অস্পষ্ট সেহেতু ধর্মতত্ত্বের কিছু মূলনিতীর ভিত্তিতে ব্যাখ্যার প্রয়োজন।
আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে লিঙ্গ জানার একটা নির্দিষ্ট সময় অাছে। যার পূর্বে তা জানা পুরোপুরি অসম্ভব। কেননা ছেলে মেয়ের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী অঙ্গ যতক্ষণ না সৃষ্টি হচ্ছে ততক্ষণ কিছু বলা বিজ্ঞানের জন্য আপাতত অসম্ভব। তবে বিজ্ঞান যখন আরো উন্নত হবে তখন হয়তো আরো সুক্ষ্ম কোন পার্থক্যের মাধ্যমেই বলে দিতে পারবে। কিন্তু কোন ক্লু ছাড়া বিজ্ঞানের পক্ষে কিছু বলা কখনোই সম্ভব নয়।
অথচ হাদিসের আলোকে আমরাই বলি বিজ্ঞানেরও অনেক পূর্বে (অর্থাৎ ছেলে মেয়ের মাঝে কোনরকম পার্থক্য সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই) ফেরেস্তারা সন্তানের লিঙ্গ জানতে পারে। কেননা আল্লাহ ছেলে মেয়ের পার্থক্য সৃষ্টি করার অাদেশের মাধ্যমেই তার ইলমুল গায়েব প্রকাশ করে দিয়েছেন।
সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য তাফসীর গ্রন্থসমূহের মধ্যে অন্যতম তাফসিরে ইবনে কাসিরে উল্লেখ্য আছেঃ “আল্লাহ জরায়ুতে অর্থাৎ মায়ের গর্ভে যা সৃষ্টি করতে চান(ছেলে নাকি মেয়ে) তা একমাত্র তিনিই জানেন। তবে যখন তিনি ছেলে কিংবা মেয়ে হওয়ার আদেশ দেন তখন তত্বাবদায়ক ফেরেস্তারা জানতে পারে”। [৩]
যারা এই লিঙ্গের ব্যাখ্যা করেছেন তাদের কাছেই এটা স্পষ্ট যে আল্লাহর ইলমুল গায়েবের বিষয়টি ফেরেস্তাদের জানানোর পূর্ব পর্যন্ত সিমাবদ্ধ। আর বিজ্ঞানও স্বীকার করতে বাধ্য যে এর আগে জানা অসম্ভব।
রবিউল ইসলাম।
লেখক ও গবেষক, সত্যমনা ব্লগ।
সুন্দর আলোচনা।
উত্তরমুছুনআমার কাছে কেউ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে আমি এভাবেই উত্তর দিই।
আসলেই নাস্তিকদের প্রশ্নগুলো এতটাই অজ্ঞতাপ্রসূত যে তার জবাব দেয়া মানে সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই না। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে কুরআনের জ্ঞানের দৈনদশার কারণে বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। আর তাই বাধ্য হয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমাদেরও তাদের অসার প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
মুছুনসত্যমনার পাশে থাকুন, পড়ুন, মন্তব্য করুন এবং সেয়ার করে দ্বীনি কাজে শরীক থাকুন।
সন্তানের লিঙ্গ কি আল্ট্রায় দেখা যায়
উত্তরমুছুন