একটা সময় ছিলো। নাস্তিকরা জোরগলায় বলতো, "যা দেখিনা, তা বিশ্বাস করিনা"। কিন্তু এ ধরনের কথা আর এখন শোনা যায় না। এখন বলে, ''পঞ্চ-ইন্দ্রিয় দ্বারা যা প্রমাণিত হয়, তা-ই বিশ্বাস করি। এর বাইরে কিছু বিশ্বাস করি না।"
কয়েকদিন আগে এক নাস্তিকগুরুর সাথে আমাদের কথা হয়েছিল। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কোনো কিছু বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার ক্ষেত্রে যদি শুধু মাত্র পঞ্চ-ইন্দ্রিয় শর্ত হয়। তাহলে Sir Isaac Newton এর 'Law of universal gravitation' প্রমাণিত করবেন কী দিয়ে?
কারণ 'মাধ্যাকর্ষণ শক্তি' চোখে দেখা যায় না। কানে শুনা যায় না। ত্বকে অনুভব করা যায় না। ঘ্রাণ নেয়া য়ায না। এবং জিহ্বা দিয়ে স্বাদও নেয়া যায় না৷ এক কথায় 'পঞ্চ-ইন্দ্রিয়' দ্বারা 'মাধ্যাকর্ষণ শক্তি' প্রমাণ করা যায় না।
তখন তিনি বললে, না। আসলে আমরা শুধু 'পঞ্চ-ইন্দ্রিয়'কেই প্রমাণের মাধ্যম বলি না। আকল বা জ্ঞান বুদ্ধিও প্রমাণের মাধ্যম হতে পারে৷ এবং আমরা তা মানি৷
-আমরা তাকে স্রষ্টা বিশ্বাসের বিষয়টা বললাম। এবং বললাম, প্রমাণ লাগলে অসংখ্য প্রমাণও দিতে পারবো।
-তিনি আঁতকে উঠে বললেন, না। স্রষ্টার বিষয়টা Scientific Lab এ প্রমাণিত হতে হবে। অর্থাৎ বিজ্ঞানীদের গবেষণাগারে প্রমাণিত হলে, তবেই আমরা বিশ্বাস করবো।
কথা শুনে কিছুটা হাসি ধরে গেলো। হাসার কারণও আছে। একটু পরে সেটা বলছি। তার আগে বলে নিই, সারা দুনিয়ার বিজ্ঞান বলছে, প্রকৃতির 5% পার্সেন্টও আমরা আবিষ্কার করতে পারি নি। সেখানে সেই প্রকৃতির স্রষ্টাকে আবিস্কার করে ফেলবে!! আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী না। সারা দুনিয়ার মানুষ আল্লাহকে অস্বীকার করলেও তার কোনো ক্ষতি নেই। দিন শেষে চোখের পানি আমাদেরই ঝরবে।
যাহোক। হাসির রহস্যটা বলি, ল্যাবে প্রমাণিত না হলে যদি তা বিশ্বাসযোগ্য না হয়। তাহলে 'theory of evolution' কোন ল্যাবে প্রমাণিত? সারা দুনিয়ার নাস্তিকরা কেনো সেটা বিশ্বাস করে?
এ প্রশ্নের যথাযথ উত্তর তিনি দিতে পারেন নি।
তাহলে মূল কথা হলো, নাস্তিকদের ভিত (নাস্তিকতাবাদের মূল স্তম্ভ) কখনো, 'যা দেখি না, তা বিশ্বাস করি না'।
কখনো, পঞ্চ ইন্দ্রিয়। কখনো বা, জ্ঞান বুদ্ধি। আবার কখনো, সাইন্টিফিক ল্যাব।
পরিশেষে বলতে হয়, পথের দিশা তারাই পায় যারা সত্যকে খুঁজে বেড়ায়। সত্যমনা হয়। গোড়ামি, হটকারিতা আর না মনার জিদ ধরে থাকলে কি আর পথ মিলবে কখনো!!
সত্যমনা লেখক -
আহমাদ আব্দুর রাজ্জাক
সত্যমনা ডট কম __বিজ্ঞান
COMMENTS