প্রশ্নোত্তরে সত্যমনা (৯)
প্রথম পর্বে আমরা 'এতো ধর্মের মাঝে কোনটা সত্য' টপিকে নাস্তিকদের আপত্তি খন্ডন করেছি। এ পর্বে 'আমরা যারা আস্তিক আছি। আমরা যারা বিশ্বাস করি, স্রষ্টা আছেন। তিনি যুগে যুগে দূত প্রেরণ করেছেন মানব জাতির সংশোধনের জন্য। আর সেই দূত বা নবী রাসূলকে ঘীরে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ধর্ম। আবার কিছু মানুষ ধর্মকে বিকৃত করে তৈরী করেছে নকল ধর্ম।' এ টপিকে।
আমরা যারা বিলিভার আছি৷ সবাই মনে করি আমার ধর্মটা সঠিক। আমি সত্য পথে আছি। আর স্বাভাবিকভাবেই আমার পথটা যদি সঠিক হয় তাহলে অন্যেরটা ভুল৷ আমারটা যদি সত্য হয় অন্যেরটা মিথ্যে।কিন্তু প্রিয় বিলিভার ভাইয়েরা! আমার পথটা সঠিক। আমার ধর্মটা সত্য। এটা কি আমার দাবী নাকি আমার গবেষণার ফলাফল! এটাই হচ্ছে মূখ্য বিষয়। যেমন:
১/ হিন্দুধর্মাবলম্বী বিলিভার যারা আছেন। তারা জানেন যে আপনার ধর্মের লোকেরা মূর্তি পুজা করে। মহাদেবতার সাথে অন্যকে শরিক করে। আবার অনেকে মহা দেবতাকে আকৃতিও দান করে। যেগুলোর সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই।
(উপনিষদ সমূহঃ অধ্যায় ৬, অনুচ্ছেদ ১। অধ্যায় ৬ , অনুচ্ছেদ ৯। গীতা, অধ্যায় ৭, অনুচ্ছেদ ২০)আরো অসংখ্য রেফারেন্সে কোট করা যাবে এ বিষয়ে। তো এখান থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, এ ধর্ম বিকৃত ধর্ম।
২/ ইহূদী-ধর্মাবলম্বী যারা আছেন। তাদের পূর্বপুরুষগণ কি আগে থেকে ইহূদী ছিলেন? অর্থাৎ মূসা আঃ এর নবুওয়াত পাওয়ার পূর্বে তারা কি ইহূদী ছিলেন? না, কখনোই না৷ বরং তারা পূর্বের নবীর অনুসারী ছিলেন৷ এখন কথা হলো, যদি আপনাদের পূর্বপুরুষগণ মূসা আ. এর বিরোধিতা করতেন। তখন আপনাদের ভাষায় আপনাদের পূর্বপুরুষরা কী হতো!? এবং যারা অলরেডি পূর্বের নবীর অনূসরণ করে মূসা আ. এর বিরোধিতা করেছেন, আপনাদের ভাষায় তাদের অবস্থান কী!!?
এ প্রশ্ন দু'টো রেখে গেলাম।
৩/ খৃস্টধর্মাবলম্বী যারা আছেন। তারা জানেন যে, ঈসা আ.কে পাঠানো হয়েছে শুধু মাত্র বনী ইসরায়েল তথা ইহুদীদের নিকট৷
বিষয়টা স্পষ্টকরে বলা হয়েছে ইঞ্জিলে, মথি ১০:৫-৭আরো বলা হচ্ছে, মথি ১৫:২২-২৪।
এখন কথা হলো, ইহুদীরা তো মূসা আ. এর অনূসারী। তাদের কাছে তো ধর্মগ্রন্থও আছে। তাহলে কেন তারা অন্য আরেকজ নবীর অনুসারী হবে?
খৃস্টানরা এখানে দু'টা যুক্তি দাঁড় করাবে। প্রথমটা হলো, মূসা আ. এর কিতাব যা ইহুদীরের কাছে আছে সেটা বিকৃত হয়েগেছে তাই স্রষ্টার পক্ষ থেকে আসা নতুন রিসালা তথা পবিত্র বাইবেল মানতে হবে। দ্বিতীয়ত আল্লাহর ইচ্ছের কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে৷ অর্থাৎ আল্লাহ যেহেতু নতুন রিসালা পাঠিয়েছেন, সেহেতু সেটা মানার মাঝেই কল্যাণ।
উপরের আলোচনা থেকে বুঝাগেলো, ১/ যুগে যুগে অসংখ্য নবী রাসূল পাঠানো হয়েছে। ২/ যদি নবীর সাথে নতুন রিসালা পাঠানো হয়, তাহলে সেই রিসালাকেই মানতে হয়। ৩/ পূর্বের রিসালা বাতিল হয়ে যায়। ৪/ এবং একনবীর চলে যাওয়ার পর অন্য নবীর আগমন হলে তার উপর ঈমান আনতে হয়। এ পয়েন্টেগুলোর দিকে লক্ষ করলে বুঝা যায় কোন ধর্ম এখন সত্য এবং পালনীয়।
এ ছাড়াও ইসলাম ছাড়া যত ধর্ম আছে, সেগুলো কোন গোত্র বা সম্প্রদায়ভিত্তিক। কারণ, ধর্মগুলোর ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর গবেষণা করলে বুঝা যায় যে, সেগুলো সমস্ত মানবজাতির জন্য আসেনি। এটা কেউ প্রমাণ করতে পারিনি। কিন্তু ইসলাম এসেছে পুরা মনব জাতির জন্য।
-আমি আপনাকে ( নবী মুহাম্মাদ সা.কে) সমস্ত মানবজাতির জন্য রহমত সরূপ পাঠিয়েছি৷ (আম্বিয়া, ১০৭)
আবারো বলছি, কোন ধর্মকে সত্য বা মিথ্যা প্রমাণ করতে হলে, সেই ধর্মের ধর্মীয় গ্রন্থ দিয়েই করতে হবে।
এখন যদি সারা পৃথিবীর ধর্মীয়গ্রন্থগুলো গবেষণা করা হয়। তাহলে, একমাত্র আল কোরআনই টিকে যাবে যে, তাতে কোন ভুল নেই। তাতে কোন ইখতিলাফ নেই।
বি.দ্র.
যারা বিলিভার। একজন মহা ঈশ্বরে বিশ্বাসী। কিন্তু ধর্ম কোনটা মানবে, সে ব্যাপারে সন্দিহান। তাদের জন্য এ পর্বটি। তারা যদি সঠিক ধর্মের সন্ধানী হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত ধর্মের ধর্মীয় গ্রন্থ চেক করবেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের ইসলামের দরজা খোলা।
যদি কোন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী তার ধর্মকেও সঠিক প্রমাণ করতে চান। তাহলে, আপন আপন ধর্ম গ্রন্থ নিয়ে কমেন্ট বক্সে হাজির হবেন। তাদেরকে অগ্রিম শুভেচ্ছা। নাস্তিক ভাইয়েরা এ পর্বের আলোচনার বাইরে। কারণ, এ পর্বটি যারা স্রষ্টায় বিশ্বাসী। কিন্তু কোন ধর্মের মাঝে থেকে স্রষ্টার আনুগত্য করবে, সে ব্যাপারে সন্দিহান তাদের জন্য।
আর নাস্তিকরা তো স্রষ্টাকে বিশ্বাস করে না। ধর্ম তো পরে। কোন ধর্ম সত্য সেটা তো আরো পরে।
আহমাদ আব্দুর রাজ্জাক ।
লেখক ও গবেষক, সত্যমনা ব্লগ।
COMMENTS