মানুষ সংশয়বাদী হবার অন্যতম প্রধান প্রশ্ন কিন্তু এটা। আমি আমার একাধিক লেখায় বলেছি, যদি মানুষ এই প্রশ্নগুলার জবাব সময়মত পেত, অবিশ্বাসের ফাঁদ থেকে অনেকেই বেঁচে যেত (হয়তো, আল্লাহ মা'লুম)। যারা সংশয়বাদী না, তারাও এই প্রশ্নের জন্য খুব ভুগে। কি দোষ করেছে আমার হিন্দু বন্ধু? কি দোষ করেছিল আমার কনভার্টেড ফ্রেন্ড এর মূর্খ দাদি যে হিন্দু অবস্থায় কিছু না জেনেই মারা গিয়েছিল? কি দোষ করেছিল তারা, যারা মুসলিম পরিবারে জন্মায় নি? কি দোষ করেছিল যারা ছোটবেলা থেকে বাবার হাত ধরে জুম্মাহ এর সালাত আদায় না করে বাবার সাথে মন্দিরে গিয়েছিল?
লেখা শুরুর আগে বলি, আমাকেও এই প্রশ্ন খুব পুড়িয়েছে। এমন অনেক প্রশ্ন মানুষকে পুরিয়ে মারতে পারে। আমরা সব সময় সব প্রশ্নের জবাব পাবো না হয়ত। হয়ত এই ছোট্ট সংশয়ই মানুষের পরিক্ষা।তবে আমরা তো অন্তত সিজদায় জেতে পারি? আমরা তো অন্তত সূরা ফাতিহা অর্থসহ পড়ে দোয়া করতে পারি? এটা তো পারি যে “আমাকে সরল পথ দেখাও”। সংশয় যদি আল্লাহ না করুক চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায়, অন্তত এটাতো বলতে পারি যে “কেউ যদি থেকে থাক, আমাকে পথ দেখাও”??? আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে ভুলে গেলে হবে না। আমি (আগন্তুক) নিজে এক সময় এমন সংশয়ে ছিলাম। তখন সেজদা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। হ্যা, অনেক ভাই বলতে পারে, কই ! আমার তো কোনো লাভ হল না? বাস্তবে ভাই আমি কিছুই জানি না, নসিহা করতে পারি শুধু।তবে আমি এমনও মানুষ দেখেছি যারা মৃত্যুর আগ মুহূর্তে ভালোভাবে মৃত্যুবরণ করে।এ ক্ষেত্রে নিজে একদম অন্তর থেকে বিনয়ী, সৎ হতে হবে,আর আল্লাহর দয়া থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না। আর সাধ্যমতো চেষ্টা করতে হবে।
আমি আমার ক্ষুদ্র ‘নাই প্রায়’ জ্ঞানের মাধ্যমে এর একটা জবাব দেয়ার চেষ্টা করবে। এবং কুরআন সুন্নাহ এর দলিল কে সবার আগে প্রাধান্য দিয়ে উত্তর দিব ইনশাআল্লাহ।
প্রথমত
একটা প্রশ্ন রাখি।
সবসময় সমতাই কি সুষমতা? সাম্যই কি ভারসাম্য?
ধরুন একজন ৬মাসের বাচ্চা, তার ঘুমানো উচিত দিনে ১২ ঘণ্টা। আর একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী/পুরুষ, তার দিনে ঘুমানো উচিত ৭ ঘণ্টা। এখন তাদের দুইজনকেই যদি সমান ট্রিট করে, তাহলে কি সেটা ন্যায় হবে? ফেয়ার হবে? দুইজনকেই যদি ৭ ঘণ্টা ঘুমাতে বলে বা দুইজনকেই যদি বলে ১২ ঘন্টা ঘুমাতে, এটাকি ফেয়ার হবে? অবশ্যই না। বরং চাহিদা অনুযায়ী ট্রিট করতে হবে। সবসময় সমতা সুষমতা নয়। সবসময় সাম্য মানেই ভারসাম্য নয়।
এবার একটু ভাবুন, আমাদের রাসুল (স) প্রাণপ্রিয় সাহাবী বেলাল (রা) [দোয়া করি আল্লাহর আমাকে উনার সাথে জান্নাতে দেখা করার সৌভাগ্য দান করেন] তিনি যে কঠিন পরীক্ষা, নির্যাতন, অত্যাচার এর সম্মুখীন হয়েছিলেন মক্কার মুশরিকদের কাছে,আমাকে বা আপনাকে যদি সেই জায়গায় রাখা হতো, আমরা কি সেই পরীক্ষায় পাশ করতাম বা সেই সাহস আমাদের সবার কি আছে? নাই, আসলেই নাই। [১]
আবার ধরুন সবাইকে যদি তায়েফ এ পাথর নিক্ষিপ্ত হবার যন্ত্রণা সহ্য করতে পাঠানো হতো? আবার ধরুন এই পর্ণগ্রাফি এর যুগে নীল দুনিয়ায় ডুবন্ত কোনো যুবককে যদি ইউসুফ (আঃ) এর পরীক্ষায় পাঠানো হতো? [২] বিষয়টা কি সবার জন্য সাধ্যের মধ্যে থাকত? বিষয়টা কি সবার জন্য ফেয়ার হতো ?
আমাদের সবার ধৈর্য কি একই? যেকোনো সাধারন মানুষই বলবে যে, নাহ। আমাদের সবার ক্যাপাসিটি কি এক? অবশ্যই না। যদি আমাদের সবার ক্ষমতা, ধৈর্য, ক্যাপাসিটি এক না হয়, তাহলে কিভাবে সমতা ন্যায় হতে পারে? বরং যার যেমন সাধ্য, তাকে সেই অনুযায়ী ট্রিট করাই ন্যায়।
আমাদের দেখতে হবে আমাদের এই জীবনটা আসলে কি?
পবিত্র কুরআন এই বিষয়ে খুবই স্পষ্ট। আমাদের জীবন হল একটি পরীক্ষা।
যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।[৩]
আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করব অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। [৪]
এর থেকে বুঝতে পারি আমাদের জীবন একটা পরীক্ষা। হ্যা, আমি জানি অনেক নাস্তিক এই পরীক্ষা নিয়ে খুব আপত্তি করে। সেটা নিয়ে নাহয় পরে আলোচনা হবে।
এখন প্রশ্ন হলো আমাদের মধ্যে কাকে কোন পরীক্ষায় ফেললে সেটা ন্যায় হবে, এটা সবচেয়ে ভালো কে জানবে? আমরা নাকি আল্লাহ ? অবশ্যই আল্লাহ, যিনি আমাদেরকে আমাদের থেকে ভালো করে জানেন, যিনি সব কিছুই জানেন, যিনি যানেন কে সৃষ্টিগতভাবে কেমন, কার ক্যাপাসিটি কেমন, কাকে কোন অবস্থায় রাখলে সেটা ন্যায় হবে।
জ্ঞান আর জ্ঞানের অভাব নিয়ে একটা উদাহরন শেয়ার করি।
সুরা কাহফ এর দিকে তাকানো যাক। মূসা (আঃ) এর ঘটনার একটা অংশ ।
আয়াত ৬০ থেকে কেউ যদি তাফসীর সহ পড়ে। খুব ভালোভাবে বুঝতে পারবে। [ছোট সহজ তাফসীরগুলার মধ্যে আমার প্রিয় তাফসির ইবন কাসির, আহসানুল বায়ান, তাফসির আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া]
আমি পুরা ঘটনা উল্লেখ করছি না।দেখুন, এখানে আল্লাহর এক জ্ঞানী বান্দা মুসা (আ) কে বলছে
“যে বিষয় তোমার জ্ঞানায়ত্ত নয় সে বিষয়ে তুমি ধৈর্য ধারণ করবে কেমন করে?” [সূরা কাহফ, আয়াত ৬৮]
এখানে আমরা দেখছি যে জ্ঞান যেই বিষয়ে নেই, সেই বিষয়ে ধৈর্য ধারণ এর কথা বলা হচ্ছে। এবং মুসা (আঃ) ধৈর্য ধারণের প্রতিশ্রুতি দিলেন।
এরপর আমরা দেখতে পাই
“অতঃপর তারা দু’জনে চলতে লাগল যতক্ষণ না তারা নৌকায় উঠল, অতঃপর লোকটি নৌকায় ছিদ্র করে দিল। মূসা (আঃ) বললেন, ‘আপনি কি তার আরোহীদেরকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য তাতে ছিদ্র করলেন? আপনি তো এক অদ্ভুত কাজ করলেন।’’ [সূরা কাহফ, আয়াত৭১]
এখানে দেখুন, কোনো স্বাভাবিক মানুষই কি বলবে যে একজন গরীব এর নৌকায় ফুটা করা ভালো কাজ? তার নৌকা এর ক্ষতি এর মধ্যে ভালো কি থাকতে পারে? তার নৌকা নষ্ট করা কিভাবে মানবিক হতে পারে? স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের হিসাব মিলাতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা জানি না এটা কিভাবে মিলবে। তবে এই অজ্ঞতার মাঝে ধৈর্য ধরা ছাড়া কিছুই করার নেই। তবে যখন আমরা আসল জ্ঞানটা লাভ করলাম, তখন উপলব্ধি করি যে আসলে সেই অসম্ভব বিষয়য়ের বাইরেও কিছু আছে। কি সেটা ?
“নৌকাটির ব্যাপার হল- তা ছিল কয়েকজন গরীব লোকের, তারা সমুদ্রে জীবিকার জন্য শ্রম করত। আমি সেটাকে খুঁতযুক্ত করতে চাইলাম, কারণ তাদের পশ্চাতে ছিল এক রাজা, সে জোরপূর্বক সব নৌকা কেড়ে নিত।” [সূরা কাহফ, আয়াত ৭৯।]
অর্থাৎ আলাহর সেই জ্ঞানী বান্দা আল্লাহর দেয়া জ্ঞানের মাধ্যমে জানত যে পশ্চাত থেকে একজন রাজা আসছে, যে ভালো ভালো নৌকা কেড়ে নিচ্ছিল। যেহুতু সেই গরীব ব্যক্তির নৌকাটি সে খুতযুক্ত করল, নৌকাটা বেচে গেল। রাজা আর সেটা ছিনিয়ে নিলেন না। দেখুন, আমাদের কাছে খারাপ মনে হচ্ছিল, মূলত সেটা কতখানি ভালো।
আমার প্রিয় দাঈ হামজা জরজিস বলেন,
“We have the pixel, Allah have the Picture !’’
আমাদের জ্ঞান অনেক সীমিত, এই সীমিত জ্ঞান এ আল্লাহর অনেক ফয়সালা আমাদের মনকে তৃপ্ত নাও করতে পারে। কারন আমাদের জ্ঞান ক্ষুদ্র। তবে যেহুতু আল্লাহ সব জানেন, নিশ্চয়ই তিনি যেই ফয়সালা করেছেন, সেটাই সঠিক। আমাদের কাছে ভালো লাগুক বা না লাগুক। আমরা তো মাখলুক। আমরা সব কিছুর মতন আল্লাহর কাছে নিজের জ্ঞানটাও সমর্পন করি। আল্লাহর শারিয়া মেনে নেই।
আল্লাহর কাকে কোন পরীক্ষায় ফেলবেন, কোন পরীক্ষায় কিভাবে ফেললে সেটা ন্যায় হবে, আমরা জানি না। তবে আমরা তার কিতাবের উপর ঈমান আনি, তাই আল্লাহ যেহেতু বলেছেন তিনি কারো সাধ্যের উপর কিছুই চাপিয়ে দেন না, অতএব সেটাই সত্য।
আবার বলছি, সাম্য মানেই ভারসাম্য বা ন্যায় না। আল্লাহ আমাদের থেকে বেশি জানেন, সব জানেন। তিনি আমাদের থেকে ভালো জানেন কার সাধ্য কতুটুক, তিনি আমাদের থেকে ভালো জানেন কাকে কোন পরীক্ষায় ফেললে সেটা ন্যায় হবে। তিনি আমাদের থেকে ভালো জানেন একজন হিজড়াকে কেমন পরীক্ষায় ফেলা কিভাবে ন্যায়, একজন অ্যামাজন এর জঙ্গলের বাসিন্দা এর পরীক্ষা কিভাবে ন্যায়।
আল্লাহর কুরানের সুরা বাকারা এর শেষ আয়াতে বলেন,
“আল্লাহ কোন ব্যক্তির উপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু আরোপ করেন না …” [সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৬]
দ্বিতীয়ত
ইসলামের সম্পূর্ণ থিওলজির একটা খুব জরুরি অংশ হলো ফিতরাত। অর্থাৎ সহজাত প্রকৃতি।
আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
“প্রত্যেক নবজাতক ফিতরাত তথা ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে। এরপর তার মাতাপিতা তাকে ইয়াহুদী বা খ্রীষ্টান অথবা অগ্নি উপাসক জরথ্রুষ্ট বানায়। যেমন চতুষ্পদ জন্তু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাকে (জন্মগত) কানকাটা দেখেছ?” [বুখারী, হাদীস নং-১৩৮৫]
আল কুরআনে এর সমর্থন রয়েছে। সুরা রুম এর ৩০নং আয়াতের তাফসীর।
“কাজেই আপনি একনিষ্ঠ হয়ে নিজ চেহারাকে দীনে প্রতিষ্ঠিত রাখুন । আল্লাহর ফিতরাত (স্বাভাবিক রীতি বা দীন ইসলাম) , যার উপর (চলার যোগ্য করে) তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন; আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই । এটাই প্রতিষ্ঠিত দ্বীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না” [সুরা রুম, আয়াত ৩০]
হাদীসে কুদসিতে আল্লাহ তা’আলা বলেন -
নিশ্চয়ই আমি আমার বান্দাদের হুনাফা তথা সহজাত তাওহীদি দ্বীনের উপর সৃষ্টি করেছি। কিন্তু, শয়তান তাদের কাছে আসে দ্বীন থেকে বিচ্যুত করতে। [সহীহ মুসলিম, ২৮৬৫]
এখানে যদি কেউ ভেবে বসে যে ফিতরাহ এর ক্ষেত্রে যেই ইসলাম কে বুঝানো হচ্ছে তা হলো নামাজ, রোজা, হজ্জ ,যাকাত সে ভুল করবে। একজন মুসলিম হল সে, যে নিজেকে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। শিরক মুক্ত বিশ্বাস, তাওহীদ। এমন আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস যিনি সব কিছুর পালনকর্তা, পরিচালক, সৃষ্টিকর্তা, ইবাদতযোগ্য একমাত্র ইলাহ। পরবর্তীতে প্রভাবিত হয়ে, বা শয়তান এর ধোঁকায় মানুষ বিকৃত আকীদা ধারণ করে।
এমনকি যদি আমরা সেকুলারদের কাজ দেখি, সেখানেও এর সমর্থন পাওয়া যায়।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্ট সাইকোলজিস্ট ড. জাস্টিন এল ব্যারেট শিশুদের উপর গবেষণা করেন। এ ব্যাপারে বেশ কিছু বইও তিনি লিখেছেন। বই গুলোর মাঝে একটি হলো "বর্ন বিলিভার্স" যেখানে স্পষ্ট তিনি উল্লেখ করেছেন,
"শিশুরা জন্মগতভাবে বিশ্বাসী, যাকে আমি বলি 'সহজাত ধর্ম'...." [৫]
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী (নাস্তিক) ড. অ্যালিভেরা পেট্রভিচ peer reviewed (৬) জার্নালে বলেন গবেষণার ফলাফল জানান,
"কিছু ধর্মীয় বিশ্বাস যে সার্বজনীন হওয়ার সম্ভাবনা আছে (যেমন কোন বিমুক্ত সত্তাকে বিশ্ব জগতের শ্রেষ্ঠ হিসেবে মৌলিক বিশ্বাস), এর স্বপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ ধর্মগ্রন্থের চেয়ে বরং (বৈজ্ঞানিক) গবেষণা থেকেই বেশি বেরিয়ে আসছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে" [৭]
ইনি হলেন একজন বিজ্ঞানী। তিনি নিজের বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল দিয়ে প্রমাণ দেখিয়েছেন যে, মানুষ সহজাত ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অদ্বিতীয়- সর্বোচ্চ বুদ্ধিমত্তায় বিশ্বাস গড়ে তোলে। তিনি আরো বলেছেন যে, ধর্মীয় গ্রন্থের চেয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ দ্বারাই শক্তিশালীভাবে সমর্থিত হচ্ছে। এদিকে ইয়েল ইউনিভার্সিটির আরেক (নাস্তিক) গবেষক পল ব্লুম peer reviewed গবেষণাপত্রে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন ঐশ্বরিক সত্তার পাশাপাশি মানুষের যে মন বলে কিছুর অস্তিত্ব আছে এ ধারণাও সহজাত শিশুদের মাঝে উদ্ভূত হয় । [৮]
সাম্প্রতিককালে অনেক সেকুলার গবেষকদের গবেষণার প্রতীয়মান হচ্ছে ধর্মবিশ্বাস প্রাথমিকভাবে ব্যক্তির ভেতর থেকে উৎপত্তি হয়... যা মৌলিকভাবে মানব মনের এক অংশ...। (৯) তাদের সংগৃহীত তথ্য থেকে নতুন তত্ত্ব বেরিয়ে আসছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি তত্ত্ব হলো, naturalness theory যা পূর্বের প্রভাবশালী anthropomorphism theory কে ছুড়ে ফেলেছে। Strong Naturalness Theory এর বক্তব্য হল, ধর্মবিশ্বাসের উদ্ভব স্বয়ংক্রিয় ও অভ্যন্তরীণ এবং তা প্রকৃতপক্ষে স্বতঃস্ফূর্ত শিশুদের মাঝে উদ্ভব হয়...। [১০]
কিছুদিন আগেই 2 মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় দু'জন গবেষকের নেতৃত্বে পরিচালিত তিন বছরব্যাপী এক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্প ৫৭ জন গবেষক ২০টি দেশে ৪০টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করেন।
তাদের এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল স্রষ্টা ও পরকালের ধারণা কি পিতা-মাতা বা সমাজ কর্তৃক চাপিয়ে দেওয়ার ফল নাকি মানব প্রকৃতির মৌলিক অভিব্যক্তি তা খুঁজে বের করা। দীর্ঘ গবেষণার পর তারা সিদ্ধান্ত উপনীত হন, স্রষ্টার পাশাপাশি মৃত্যু পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস মানুষের সহজাত প্রবণতা অন্তর্গত। [১১]
[বিঃ দ্রঃ ফিতরাত নিয়ে সেকুলারদের আলোচনার অংশটি ডা. রাফান আহমেদ এর বিশ্বাসের যৌক্তিকতা থেকে নেয়া হয়েছে]
এর থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি আল্লাহ প্রত্যেককেই ফিতরাত এর উপর রেখেই দুনিয়াতে পাঠায়। এবং সমাজ, পরিবার বা বিভিন্ন কারণে সে বিকৃত আকীদা গ্রহন করে।
সেপিয়েন্স ইন্সটিটিউট এর একটি “নো ডাউট” কোর্সে উস্তাদ হামজা একটি খুব সুন্দর উপমা আনেন। যেটা এই ছবিতে উঠে এসেছে। আমাদের সে সহজাত অবস্থা, বিশ্বাস, প্রকৃতি, তা সময়ের সাথে, অভিজ্ঞতার সাথে, বিভিন্ন সংশয়পূর্ণ প্রশ্নের সাথে বা অনেক কারনে বিকৃত অবস্থায় যায়। ক্লাউডেড হয়। অনেকটা গাড়ির সামনের কাচে ময়লা জমার মতন। যখন কোনো যুক্তি বা দাওয়াত পৌছায়, এবং মানুষ অহংকার না করে, সৎ ভাবে গ্রহন করে, তখন মনের সকল মেঘ দূর হয়ে যায়। মানুষ পূর্বের ফিতরাতি অবস্থায় আবার ফিরে যায়। হয়ত সেটাই আল্লাহর হেদায়েত হতে পারে। হতে পারে কোনো মুসলিমের ভালো আচরণ, কুরআন তিলাওয়াত, সালাত আদায় দেখেও অন্তরের সেই অবস্থায় কেউ ফিরে যেতে পারে।
আমার জানি না কার অন্তরে কি আছে, তবে নিশ্চয়ই যে সঠিক নিয়তে বিনয়ের সাথে সত্য খুজবে, আল্লাহ তাকে অবশ্যই পথ দেখাবে। অনেকেই হয়ত দেখবে যে কোনো অমুসলিম যদি ইসলাম গ্রহন করে, তাহলে তাকে আমরা কনভার্টেড মুসলিম না বলে রিভার্টেড মুসলিম বলি। এর কারণটা হল এই ফিতরাত।
এবং আল্লাহ অবশ্যই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তিনি নিজে হেদায়েত পৌঁছে দিবেন। কিভাবে কাকে দিবে, আমরা জানি না। ব্রাজিলের একটা শহরে এমনও মানুষ দেখা যায় যারা নিজেরা মসজিদ তৈরি করেছে। কোনো মুসলিমের সাথে সাক্ষাত না হয়েই ইসলাম গ্রহন করেছে। তাদের কারো কারো কথা হল এই যে, তারা কানে কোনো আওয়াজ শুনেছে, বা স্বপ্নে কিছু দেখেছে। [১২] কতুটুকু সত্য মিথ্যা জানি না, তবে এই নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে যদি আল্লাহ চায়, মুসলিম ছাড়া বা সহ, তিনি তার বার্তা পৌঁছে দিতে পারেন।
আল্লাহ কুরআনে বলেন,
“অচিরেই আমরা তাদেরকে আমাদের নিদর্শনাবলী দেখাব, বিশ্ব জগতের প্রান্তসমূহে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; যাতে তাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, অবশ্যই এটা (কুরআন) সত্য। এটা কি আপনার রবের সম্পর্কে যথেষ্ট নয় যে, তিনি সব কিছুর উপর সাক্ষী ?” [১৩]
“যে সঠিক পথে চলবে সে তার নিজের কল্যাণের জন্যই সঠিক পথে চলবে, আর যে পথভ্রষ্ট হবে তার ভ্রষ্টতার পরিণাম তার নিজের উপরেই পড়বে। কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না। এবং, রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি আযাব দিব না”। [সূরা ইসরা, আয়াত ১৫]
“আমি তোমাকে সত্যসহ পাঠিয়েছি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি।”[সূরা ফাতির, আয়াত ২৪]
তৃতীয়তঃ
জরুরি নয় যে একজন মুসলিম জন্মগত মুসলিম হলেই যে চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে না। আল্লাহ একজন মুসলিম কেউ পরীক্ষা করেন। পুরা জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা পরীক্ষার হলে থাকি। কেউ সারাজীবন সালাত আদায় করল, আর শেষ বয়সে যদি মাজারে সেজদা দিয়ে শিরক করে বসে? অথবা কুরআন এর কিছু অস্বীকার করে? তাহলে তো কাফির হয়ে যাবে। একজন মুসলিম জন্মগত মুসলিম হয়েও কাফির, মুশরিক হয়ে মারা যেতে পারে। যদি বিকৃত আকীদা নিয়ে মারা যায়? আর মুনাফিকির কথা তো বাদই দিলাম। আমাদের চারপাশে অগণিত মুসলিম নামধারী লোক আছে, যারা জীবনে সালাত আদায় করে না, ইসলামের বহু বিধান অপছন্দ করে, দ্বীন নিয়ে উপহাস করে। তারা নিশ্চয়ই জন্মগত মুসলিম বলে মুক্তি পেয়ে যাবে না। কতো মুনাফিক আছে না আমাদের চার পাশে? কাফির, মুনাকিফ, মুশরিক তাদের সবার জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন জ্বলন্ত আগুন। সুরা মূলক এর একটা আয়াত মনে পড়ে গেল।
“রোষে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে, যখনই তাতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তাদেরকে রক্ষীরা জিজ্ঞেস করবেঃ তোমাদের নিকট কি কোন সতর্ককারী আসেনি?
তারা জবাব দিবে, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের কাছে সতর্ককারী এসেছিল, কিন্তু আমরা তাদেরকে অস্বীকার করেছিলাম আর আমরা বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কোন কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে পড়ে আছ । এবং তারা আরও বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম তাহলে আমরা জাহান্নামবাসী হতাম না। তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে, অতএব দূর হোক জাহান্নামের অধিবাসীরা![সূরা মূলক, আয়াত ৮-১১]
আমরা নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখি, কতো কতো দ্বীনের দাওয়াত, নসিহা, আমরা মুসলিম হয়ে অস্বীকার করি ! যাই হোক। তবে এখান থেকে আমরা দেখি, আমরা আমাদের কর্ম ফলেই জাহান্নামে যাব। এবং জরুরী নয় যে জন্মগত মুসলিম হলেই জান্নাতি। একজন জন্মগত মুসলিম ও শেষ মুহূর্তেও কাফের, মুশরিক, মুনাফিক, মুরতাদ হয়ে মরতে পারে।
চতুর্থঃ
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি যে তিনি কারো উপর জুলুম করবে না। এবং আল্লাহ কারো ঈমান নষ্ট করে দেয় না।
“নিশ্চয়ই আল্লাহ কারো প্রতি বিন্দুমাত্রও জুলুম করেন না; আর যদি তা (মানুষের কর্ম) সৎকর্ম হয়, তবে তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে বিপুল সওয়াব দান করেন।” [১৪]
“ওদের প্রত্যেককেই আমি তার পাপের কারণে পাকড়াও করেছিলাম। তাদের কারো প্রতি আমি পাঠিয়েছিলাম পাথরসহ ঝটিকা, কারো প্রতি আঘাত হেনেছিল বজ্রের প্রচন্ড আওয়াজ, কাউকে আমি প্রোথিত করেছি ভূগর্ভে আর কাউকে দিয়েছিলাম ডুবিয়ে। তাদের প্রতি আল্লাহ কোন জুলুম করেননি, তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল।”
[১৫ ]
“আল্লাহ তোমাদের ঈমান বিনষ্ট করবেন না, নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল, অতি দয়ালু।“ [সূরা বাকারা, আয়াত ১৪৩]
এখন বিষয় হলো আমরা বুঝতে পারছি যে, আল্লাহ কারো উপর জুলুম করবে না, যে ব্যক্তি জেনে বুঝে সত্য প্রত্যাখ্যান করবে, সে তার কর্মফল পাবে। কুফর মানেই তো অস্বীকার করা। তবে যে ব্যক্তি ইসলাম সম্পর্কে জানেই না?
অনেকেই বলতে পারে যে এই যুগে এমন হওয়া কঠিন। তবে আমি বলি এই যুগেও হতে পারে। বরং অনেকেই এই ক্যাটাগরিতে পরে। অসংখ্য মানুষ এখন ইসলামোফোবিয়া তে আছে। ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে অভিজাত শ্রেণীর মানুষ, অনেকেই হতে পারে ইসলামের সঠিক দাওয়াত না জেনেই মারা যাচ্ছে। আমরা জানিনা কে কোন নিয়তে মৃত্যুবরণ করছে, তবে আমরা রাসুল (স) এর হাদিস থেকে জানতে পারি যারা দীনের দাওয়াত পায়নি, তাদের আখিরাতে একটি পরীক্ষা হবে।
আল্লাহর বলেন,
“যে সঠিক পথে চলবে সে তার নিজের কল্যাণের জন্যই সঠিক পথে চলবে, আর যে পথভ্রষ্ট হবে তার ভ্রষ্টতার পরিণাম তার নিজের উপরেই পড়বে। কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না। এবং, রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি আযাবদাতা নই”। [সূরা ইসরা, আয়াত ১৫]
এবং আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীস থেকে জানতে পারি,
চার প্রকারের লোক কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার সাথে কথোপকথন করবে। প্রথম হলো বধির লোক, যে কিছুই শুনতে পায় না। দ্বিতীয় হলো সম্পূর্ণ নির্বোধ ও পাগল লোক, যে কিছুই জানে না। তৃতীয় হলো অত্যন্ত বৃদ্ধ, যার জ্ঞান লোপ পেয়েছে। চতুর্থ হলো ঐ ব্যক্তি, যে এমন যুগে জীবন যাপন করেছে যে যুগে কোনো নবী আগমন করেননি বা কোনো ধর্মীয়শিক্ষাও বিদ্যমান ছিলোনা। বধির লোকটি বলবে, “ইসলাম এসেছিলো, কিন্তু আমার কানে কোনো শব্দ পৌঁছেনি”। পাগল বলবে, “ইসলাম এসেছিলো বটে, কিন্তু আমার অবস্থা তো এই ছিলো যে শিশুরা আমার ওপর গোবর নিক্ষেপ করতো।” বৃদ্ধ বলবে, “ইসলাম এসেছিলো, কিন্তু আমার জ্ঞান সম্পূর্ণ লোপ পেয়েছিলো, আমি কিছুই বুঝতাম না।” আর যে লোকটির কাছে কোনো রাসুল আসেনি এবং সে তাঁর কোনো শিক্ষাও পায়নি সে বলবে, “আমার কাছে কোনো রাসুল আসেননি এবং আমি কোনো সত্যও পাইনি। সুতরাং আমি আমল করতাম কীভাবে?” তাদের এসব কথা শুনে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে নির্দেশ দেবেন—“আচ্ছা যাও, জাহান্নামে লাফিয়ে পড়ো।” রাসুল (ﷺ) বলেন, “যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! যদি তারা আল্লাহর আদেশ মেনে নেয় এবং জাহান্নামে লাফিয়ে পড়ে, তবে জাহান্নামের আগুন তাদের জন্য ঠাণ্ডা আরামদায়ক হয়ে যাবে।” অন্য বিবরণে আছে যে, যারা জাহান্নামে লাফিয়ে পড়বে তা তাদের জন্য হয়ে যাবে ঠাণ্ডা ও শান্তিদায়ক। আর যারা বিরত থাকবে, তাদের হুকুম অমান্যের কারণে টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে”
ইমাম ইবন জারির (রহ.) এই হাদিসটি বর্ণনা করার পরে আবু হুরাইরা (রা.) এর নিম্নের ঘোষণাটি উল্লেখ করেছেন, “এর সত্যতা প্রমাণ হিসেবে তোমরা ইচ্ছা করলে আল্লাহ তা‘আলার (কোনো রাসুল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না) বাক্যও পাঠ করতে পারো।” [১৬ ]
এছাড়াও বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাতে এসেছে তাদের একাধিকবার বা ২বার লাফ দেবার সুযোগ দেয়া হবে।
এইসব ক্ষেত্রে একটা আয়াত আমাদের বার বার মাথায় আনতে হবে এবং তা হলো সূরা বাকারা এর শেষ আয়াত।
“আল্লাহ কোন ব্যক্তির উপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু আরোপ করেন না,সে ভাল যা করেছে সে তার সওয়াব পাবে এবং স্বীয় মন্দ কৃতকর্মের জন্য সে নিজেই নিগ্রহ ভোগ করবে……” [সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৬]
সুতরাং এখান থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে কেউ জন্মগত ভাবে অমুসলিম হলেই যে চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বরং তিনি তার কর্মফলই পাবে। আর যারা দ্বীনের দাওয়াত পায়নি, তাদের আখিরাতেও সুযোগ দেয়া হবে।
অর্থাৎ এই আলোচনা থেকে আমরা কিছু পয়েন্ট পাই।
১. সমতাই সুষমতা না, সাম্যই ভারসাম্য নয়।
২. সর্বজ্ঞানী আল্লাহর সব হিকমা আমরা বুঝতে পারব না
৩. মাখলুক এর থেকে আল্লাহ ভালো জানবে কোনটা কিভাবে ন্যায়, এবং তিনি ভালো জানবে কাকে কিভাবে কোন্ পরীক্ষায় ফেললে সেটা তার সাধ্যের ভিতরে হবে, কারন স্রষ্টাই সবচেয়ে ভালো জানেন সৃষ্টির সীমাবদ্ধতা এবং গুন। এবং সবাই সমান নয়।
৪. আমাদের যে জ্ঞান নেই, সেই ক্ষেত্রে আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
৫. আল্লাহ কারো সাধ্যের উপর কিছু চাপিয়ে দেন না বরং মানুষ তার কর্মফল পাবে।
৬. আল্লাহ সবাইকে ফিতরাতের উপর সৃষ্টি করেছেন।
৭. আল্লাহর সকল জাতির কাছে নবি পাঠিয়েছেন। যার কাছে ওহী পৌঁছায়নি, ওহী পৌঁছানো ছাড়া আল্লাহ শাস্তি দিবেন না।
৮. জরুরী নয় একজন জন্মগত মুসলিম চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবেন না। একই ভাবে জরুরী নয় একজন জন্মগত অমুসলিম মাত্রই জাহান্নামী।
৯. যাদের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছায়নি, তাদের আখিরাতে পরীক্ষা নেয়া হবে।
১০. আল্লাহ কারো উপর যুলুম করবেন না। বিচার দিবসে সব যখন পরিষ্কার হয়ে আমাদের সামনে আসবে, আমরা নিজেরাই নিজেদের জন্য আফসোস করব।
সত্যমনা লেখক- আগন্তুক।
সত্যমনা ডট কম।
[১] https://www.youtube.com/watch?v=2xaEDp5Bf-8
[২]https://www.youtube.com/watch?v=VxzgBgPPEA4&list=PLRRmxaFCrLnUhtZtRFOaksM17ftYoRvBT&index=9
[৩] সুরা মূলক, আয়াত ২
[৪] সুরা দাহর, আয়াত ২
[৫] Dr. Justin L. Barrett, Born Believers: The Science of Children's Religious Belief; p.136 (Simon and Schuster, Mar 20, 2012)
[৬] peer reviewed: কোন গবেষকের পাণ্ডিত্যপূর্ণ কাজ, গবেষণা বা ধারণা কোন জার্নাল বা বইয়ের প্রকাশের আগে স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা যাচাই বাছাই হওয়ার প্রক্রিয়া।
[৭] Olivera petrovich, Ke psychological issue in study of religion; Psihologija (2007), Volume 40, Issue 3, p 360;
[৮] Paul Bloom, Religion in natural (2007), Journal of Development Science 10 :1, p. 147-151
[৯] Patrik McNamara Ph.D, Wesley J. Wildman (etd.), Science and the World's র; vol.02 (person and groups), p.206, 209
[১০] প্রাগুক্ত, p 210;
[১১] University of Oxford. "Humans 'predisposed' to believe in gods and the afterlife।" ScienceDaily, 14 july 2011.
[১২] https://www.youtube.com/watch?v=1CcFjZ-tK3I
https://www.youtube.com/watch?v=p0pa_A9WUb8&t=675s
[১৩] সুরা ফুসিলাত আয়াত ৫৩
[১৪] সুরা আল নিসা, আয়াত ৪০
[১৫] সুরা আনতাবুত আয়াত ৪০
[১৬] মুসনাদ আহমাদ, তাফসির ইবন কাসির {তাফসির পাবলিকেশন কমিটি (ড. মুজিবুর রহমান)}, সুরা বনী ইসরাইল ১৫ নং আয়াতের তাফসিরএবং মুসনাদ আহমাদ, তাফসির ইবন কাসির {তাফসির পাবলিকেশন কমিটি (ড. মুজিবুর রহমান)}, সুরা বনী ইসরাইল ১৫ নং আয়াতের তাফসির
কৃতজ্ঞতাঃ শাইখ ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া, মুশফিকুর রহমান মিনার, ডা. রাফান আহমেদ, হামজা জরজিস, সেপিএন্স ইন্সটিটিউট, আইএরা।
মাশাল্লাহ।
উত্তরমুছুন