প্রগতিশীলদের মুখোশ উন্মোচন (৩)
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাত। যেটা কিনা ছিলো মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের রাত । রাতের আঁধারে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালানো হয়ে ছিলো। রাত সাড়ে ১১টায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে জিপ-ট্রাক বোঝাই করে পাকিস্তানি সৈন্যরা ট্যাংকসহ আধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে। আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে গর্জে ওঠে আধুনিক রাইফেল, মেশিনগান ও মর্টার।
ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দফতর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন স্থানে তখন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে লাশের পর লাশ। মধ্যরাতের ঢাকা তখন লাশের শহর। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মর্নিং হেরাল্ড পত্রিকার ভাষ্য, কেবল ২৫ মার্চ রাতেই বাংলাদেশে প্রায় একলাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল।
এমন একটা রাতের সাথে ইসলামের ফরজ বিধান পর্দাকে তুলো না করা হলো। কতোটা বুক ফুলিয়ে অবমাননা করা হলো। তবুও আমরা চুপ। বুকে পাথর চাপা দিয়ে হজম করে নিচ্ছি। সয়ে নেয়ার ক্ষমতা নাই তবুও সয়ে নিচ্ছি। বাংলাদেশের চিহ্ন বহন করে 'লাল-সবুজের পতাকা'টা যেমন সামান্য কাপড়ের টুকরা। কিন্তু এর সাথে মিশে আছে আমাদের আবেগ ভালোবাসা। আমাদের সম্মান শ্রদ্ধা। তদ্রূপ বোর্কা হিজাব
সামান্য কাপড়ের তৈরি হলেও এর সাথে মিশে আছে রবের নির্দেশনা। যার ফলে প্রতিটি মুমিন হৃদয় ব্যথায় কাতর হয় যখন তাকে অবমাননা করা হয়। প্রতিটি মুসলিম-আত্মা ব্যথিত হয় যখন তাকে ব্যঙ্গ করা হয়।
কোরআন সুন্নাহর মৌলিক বিষয়গুলোকে বারবার আঘাত হানা হচ্ছে। তবুও তাদের বিচার হচ্ছে না। বিচার তো দূরের কথা প্রশ্নেরও সম্মুখীন করা হচ্ছে না ও'দেরকে। করবেই বা কেন ধর্মীয় আদেশ নিষেধ, বিধিবিধানকে তো কবেই ও'রা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছে।
তবে আজকে আর বিচার চাব না। বিচার দিচ্ছিও না কারো কাছে। শুধু কয়েকটি উত্তর চাই। বোর্কা পড়া সন্মানিতা বোনেরা কি আপনাদের ক্ষতি করেছে!? আপনাদের মাথায় বাড়ি দিয়েছে? আপনাদের ওপর তাদের পোশাক চাপিয়ে দিয়েছে? তাহলে কেন তাদেরকে এতো জঘন্য বিষয়ের সাথে সাদৃশ্য করলেন?
আপনারা যখন বুকখোলা রাখতে গিয়ে ভিন্ন কিছু প্রদর্শন করেন। পেট দেখাতে গিয়ে পাবলিক প্লেসে ভিন্ন কিছু দেখিয়ে থাকেন৷ তখন তো কোনো মুসলিম গিয়ে আপনার মাথায় লাঠি ভাঙে না। আপনার মুখে থুথু মারে না।
আর নিজেরা অর্ধোলোঙ্গ থাকার জন্য তো সারা দিন ব্যক্তি স্বাধীনতার কান্না জুড়ে দেন। সাহাবাগ, পেসক্লাব, ঢাকা ভার্সিটির সামনে, রাস্তায়, হাটে বাজারে পোশাকের স্বাধীনতার গলাফাটা চিৎকার জুড়েদেন। তাহলে আজ কিভাবে ভুলে গেলেন বোর্কা যদি কেউ পড়তে চায়৷ নিজের দেহ, চেহারা যদি কেউ অন্যকে দেখাতে না চায়। তাহলে কি এটা তার স্বাধীনতার ভেতর পড়ে না? নাকি বলবেন, না না না এটা ব্যক্তি স্বাধীনতা নয়। শুধু আমরা যেটার দাবী করছি সেটাই ব্যক্তি স্বাধীনতা।
গুহামানবের ইতিহাসে পড়ে ছিলাম, গুহাবাসীরা পোশাকের অভাবে কিংবা পোশাক পড়া না বুজার কারণে কোনোরকমে ইজ্জতটা ঢেকে রাখতো। কিন্তু আজকের এনাদেরকে দেখে গুহামানবদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সমাজে এনাদের মতো অর্ধোলোঙ্গ মহিলাগুলো আবার মানবজাতিকে গুহায় নিয়ে যেতে চায়। এই Shawan Mahmudদের থেকে সেইভ থাকুন।
সত্যমনা লেখক
আহমাদ আব্দুর রাজ্জাক
সত্যমনা ডট কম।
COMMENTS