.ধর্ম শব্দ প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ।
.এক নয়া ধর্মের আবির্ভাব।
.উদারমনা।
.একটি বিস্ময়।
'ধর্ম' শব্দটির অর্থ কী। সেটা জানার আগে জানতে হবে 'ধর্ম' শব্দটি মুসলিম বাঙালিরা কোন অর্থে বুঝে। 'ধর্ম' শব্দটি আরবি 'الدين' ( দীন) এর অর্থ বহন করে। 'দীন' এর কয়েকি অর্থ রয়েছে। যেমন:
(ক)
একত্ববাদ। একজন সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস।
(إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّـهِ الْإِسْلَامُ).
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট মনোনীত ধর্ম ইসলাম। সূরা আল ইমরান, আয়াত, ১৯।
(খ)
প্রতিদান। ফলাফল। প্রসিদ্ধ উদাহরণ, كَمَا تَدِينُ تُدان ( যেমন কর্ম তেমন ফল)।
(গ)
আনুগত্য।
(ঘ) হিসাব। (الَّذِينَ يُكَذِّبُونَ بِيَوْمِ الدِّينِ) যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে হিসাবের দিনকে। সূরা, মুতাফ্ফিফীন, আয়াত, ১১।
মুসলিম বাঙালিরা মোটাদাগে ধর্ম বলতে বুঝে আল্লাহর পক্ষ থেকে মুহাম্মাদ সা.কে যে শরীয়ত দেয়া হয়েছে সেটাই ধর্ম।
এর মানে ধর্মের সাথে আস্তিকতা বা বিশ্বাসের সম্পর্কটাও ওতপ্রতভাবে জড়িত।
আবার কেউ ধর্মের রূপক অর্থও করে থাকেন। যেমন: "কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাক্তন অধ্যাপক শৈলেন্দ্র বিশ্বাস এম. এ প্রণীত সংসদ্ বাঙ্গালা অভিধানে ধর্ম শব্দের অর্থ করা হয়েছে- ‘স্বভাব, শক্তি, গুণ’ অর্থাৎ বস্তুর অভ্যন্তরস্থ সেই নীতি যা সে মেনে চলতে বাধ্য থাকে। যেমন আগুনের ধর্ম হলো পোড়ানো, পানির ধর্ম ভেজানো ইত্যাদি। আগুন ও পানির এই গুণ সনাতন শাশ্বত। লক্ষ বছর আগেও আগুন পোড়াতো, লক্ষ বছর পরও পোড়াবে। এটাই তার ধর্ম।"
হাস্যকর হলেও সত্য কেউ কেউ এই রূপক অর্থেই ধর্মকে বুঝতে চান। এবং এই রূপক অর্থে ধর্মকে প্রয়োগের ব্যর্থ চেষ্টা করেন।
.এক নয়া ধর্মের আবির্ভাব।
যুগ, কাল, গোত্র, সম্প্রদায়, স্থানের ভিন্নতায় আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। একই নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছেন মৌলিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে। যেমন, সব নবী-রাসূলের একটি মৌলিক দাওয়াত ছিলো একত্ববাদ। আবার বিধানাবলির ক্ষেত্রে ভিন্নতার সৌন্দর্যও ছিলো। যার ফলে প্রেরিত নবী-রাসুলের ভিন্নতায় ভিন্ন ভিন্ন ধর্মও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। আবার আসমানি সত্যধর্মের বিপরীতে মিথ্যা ধর্মের আবিস্কারও হয়েছে। যা মানবরচিত মনগড়া বানানো ধর্ম ছিলো। এসব মিথ্যা ধর্মের ছিলো না কোনো ভিত্তি। ছিলো না কোনো ঐশী বিধানাবলি। এমনই একটি নয়া ধর্মের নাম 'মানবধর্ম'।
কে সৃষ্টি করলেন এই ধর্ম? এই ধর্মের স্রষ্টা কে? কবে থেকে শুরু হলো এই ধর্ম? এই ধর্মের নীতিনৈতিকতা কী? সঠিক ও সত্য ধর্ম বর্জন করলে পরকালে যে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। এই ধর্ম বর্জন কলে কী এমন কিছু হবে? এই ধর্মের অনুসারীদের কি উপকার লাভ করবে দুনিয়ায় কিংবা পরকালে? এমন হাজারো উত্তরহীন প্রশ্ন থেকে যায়।
সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতি। মনুষ্যত্ব। আর মানবতাবোধ এর নামই কি শুধু ধর্ম? না। কখনো না। ধর্ম এক বিস্তৃত বিষয়ের নাম। ইসলাম ধর্মের একটি শাখা মাত্র সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন। হ্যাঁ, মনুষ্য, মনুষ্যত্ব আর মানবতাবোধ ধর্মের অংশ। কিন্তু শুধু মনুষ্য, মনুষ্যত্ব আর মানবতাবোধই ধর্ম নয়।
উদারমনা
উদারমনা শব্দটা শুনতে ভালো লাগে। অর্থটাও মনে ধরে। কিন্তু সব জায়গায় উদারমনা হওয়া অনুচিত। বোকামি। যেমন স্বাভাবিকভাবেই একজন বাংলাদেশী নিজের পরিচয় গর্ব করে বলবে আমি বাঙালী। আমি বাংলাদেশী। কিন্তু নিজের পরিচয় দেওয়ার ক্ষেত্রে তো অনেক রাষ্ট্রের নাম বললো না। বাংলাদেশী হয়ে নিজেকে ইন্ডানায়ি কিংবা পাকিস্তানি বলাটা কি দোষের? হ্যাঁ, এটা দোষের৷ এতে কি বৈষম্য প্রকাশ পায়? না। এতে বৈষম্যও প্রকাশ পায় না। এক্ষেত্রে উদারমনা হওয়া বোকামি। নিজের দেশের সাথে গাদ্দারি।
কিন্তু ধর্মের বেলায় কিছু মানুষ তা ভুলে যায় কেন? নিজেকে স্বধর্মের পরিচয় দিতে হীনমন্যতায় ভুগে কেন?
একজন মুসলিম হয়ে নিজের ধর্মীয় পরিচয় হাইড করার চেষ্টা করে কিভাবে? কেন নিজেকে মানবধর্মের পরিচয় দেয়? এটা কি ইসলামের সাথে গাদ্দারি নয়?
একটি বিস্ময়।
শুধুমাত্র মানবতাবোধই যদি ধর্ম হয়। তাহলে স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস প্রত্যাখ্যানকারী ধর্মীয় অনুশাসন বর্জনকারী নীতিনৈতিকহীন শুধুমাত্র মানবতারদাবীদার একজন নাস্তিকও তো বড় ধার্মিক! নাস্তিকও যখন ধার্মিক!! ধর্ম বর্জনকারীও যখন ধার্মিক!!!
সত্যমনা লেখক
আহমাদ আব্দুর রাজ্জাক
Ahmad Abdur Razzak
Masallah
উত্তরমুছুনমানব দেহ ভিত্তিক ক্রিয়াকলাপ যা দ্বারা স্রষ্টাকে পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করে কিছু লোক তা হলো মানবধর্ম। যা অনেকে মানবতার সাথে গুলিয়ে ফেলেন। অষ্টম শতক থেকে বাংলায় দেহ ভিত্তিক ধর্ম চর্চা আছে যা চর্যাপদে পাওয়া যায়। অন্যদিকে জনাব লালন সাই সেটিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন। তিনি দিন থাকিতে "তিনের" সাধন করতে বলেন! এই তিন হল নারীর পিরিয়ডের পরের তিন দিন। মানবধর্মের লোকেরা বিশ্বাস করে যা আছে ভান্ডে তা আছে ব্রহ্মাণ্ডে। যাইহোক মানবধর্ম একটি কাল্ট যার ভিত্তি কসমিক সেক্স।
উত্তরমুছুন