ইসলাম বিদ্বেষী পাঠ্যপুস্তকে কী আছে কী নেই (৯)
ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইতে রোমানার আত্মপরিচয় নামে আমাদের সন্তানদেরকে এক আত্মপরিচয় শেখানো হচ্ছে। যার পরিচয়ের মধ্যে বিন্দুমাত্র ধর্মের ছোঁয়া লাগতে দেয়া হয়নি। সে যে মুসলিম' এটাও তার গুরুত্বপূর্ণ কোনো পরিচয় নয় বরং অপশনাল অনুল্লেখযোগ্য পরিচয়।
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই। পৃ:৪। ষষ্ঠ শ্রেণী। |
একজন মানুষের 'মুসলিম' পরিচয়ের চেয়েও 'সে ব্রাজিল ফুটবল দলের ভক্ত' পরিচয়টা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামিক কোন রিচুয়াল এই মুসলিম মেয়েটির পরিচয়ের অংশ হতে পারে না। কেননা এগুলো প্রচার যোগ্য না, প্রচার যোগ্য হল- সে সিনেমায় করুণ দৃশ্য দেখে কাঁদে, সে গান গায় ভালো, ব্রাজিল ফুটবল দলের ভক্ত, টিভিতে ডিসকভারি দেখে ইত্যাদি।
১৮ টি পরিচয়ের মধ্যে একটাতেও ধর্মের কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি, এটা কাকতালীয় না, পরিকল্পিত। ধর্মহীন সমাজ গড়তে হলে তো পাঠ্যপুস্তকে ধর্মকে রাখা যাবে না, ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে। অনেকে বলতে পারেন, কে না কে রুমানা! তার পরিচয় নিয়ে আপনাদের এত মাথাব্যথা কেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি রোমানাকে নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা না, আমাদের মাথা ব্যথা আমাদের সন্তানদেরকে নিয়ে। কেননা এই আত্মপরিচয় আমাদের সন্তানদেরকেই গিলানো হবে। তারা এই পরিচয় দ্বারা প্রভাবিত হবে। প্রকৃতপক্ষে রুমানা তো জাস্ট একটা নাম, যার কোন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু নামের আড়ালে এই পরিচয় গুলো কোন দেশ থেকে আমদানি করা হলো!? যদি বাংলাদেশের হয়, তাহলে তো এতে ধর্ম থাকা আবশ্যক। কেননা বাংলাদেশের মানুষ প্রচন্ড রকম ধর্মপরায়ণ।
রুমানা নেলসন ম্যান্ডেলার ভক্ত। আমি বুঝলাম না! বাংলাদেশে ক্লাস সিক্সের কোন বাচ্চা পাওয়া যাবে কিনা যে নেলসন ম্যান্ডেলাকে চিনে? অথচ বাংলাদেশের প্রায় সকল বাচ্চা বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স.) কে চিনে, অন্তর থেকে ভালবাসে। মানবতায় অবদান রাখার কারণে যদি কারো নাম পাঠ্যপুস্তকে দিতে হয় তাহলে সবার আগে মুহাম্মদ (স.) এর নাম দেওয়া উচিত। কেননা নেলসন ম্যান্ডেলার চেয়ে হাজার গুন বেশি অবদান রেখেছেন তিঁনি।
তদুপরি উক্ত অধ্যায়ে ছাত্রছাত্রীদের যে নাম ব্যবহার করা হয়েছে তাতেও লেখকদের ধর্মহীন মানসিকতা ফুটে উঠেছে। অন্বেষা, প্রকৃতি, অনুসন্ধান, নিসর্গ, স্বাধীন। এই নামগুলো কি বাংলাদেশের মানুষের নাম?
অনেকেই ভাবতে পারেন, তারা কি নিজেদের ইচ্ছে মতো নামও নির্বাচন করতে পারবে না? তাদেরকেই বলছি; না, পারবেনা। প্রত্যেকটি দেশের পাঠ্যপুস্তক রচিত হয় উক্ত দেশের বোধ ও বিশ্বাসকে ঘিরে। আপনি চাইলেই ভিন্ন সাংস্কৃতি এই দেশে আমদানি করতে পারবেন না। সে অধিকার আপনাকে দেয়া হয়নি।
পরিশেষে রুমানার আত্মপরিচয় বিশ্লেষণে লেখকদেরও কয়েকটা পরিচয় ফুটে উঠেছে; ১/ নিজেরা ধর্মহীন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও ধর্মহীন বানানোর ইচ্ছা। ২/ বাংলাদেশের সাংস্কৃতির তুলনায় ভিন্ন সাংস্কৃতিতে বেশি আগ্রহী।
রবিউল ইসলাম।
লেখক ও গবেষক, সত্যমনা ব্লগ।
COMMENTS